দক্ষিণ ভারত: চটপটে এবং সংক্ষিপ্ত ট্র্যাভেল গাইড

Mayank Kumar

Last updated: Jul 14, 2017

Author Recommends

Events

Kerala: Onam (August), Kerala Boat Race (August) and Pongal (January)
Bengaluru: Karaga (March - April), Ganesh Chaturthi (September) and Diwali (October - November)
Pondicherry: Pongal (January) and Masi Magam (February)

Click

Shots of the Kerala backwaters from a houseboat
Wildlife photography at one of the many national parks in South India

Greetings

Kerala: How are you? - How are you? - Sukhamalle?
Bengaluru: How are you? - Hegiddeera?
Tirupati: How are you? - Meeru elaa unnaru

Filmy

"Guru", "Chennai Express" and "Raavan" are some popular Bollywood movies shot in Kerala

Safety

Police: 100
Ambulance: 101

Want To Go ? 
   

বিস্তৃত সবুজে ঢাকা ব্যাকওয়াটার, সুন্দর বীচ এবং এবং আশ্চর্য স্থাপত্যকলা দক্ষিণ ভারতকে ভারতীয় পর্যটন-শিল্পে নেতৃত্বের শিরোপা দিয়েছে। আরব সাগরে লাক্ষাদ্বীপের দুটি দ্বীপগুচ্ছের সঙ্গে পাঁচটি মূল রাজ্য, বঙ্গোপসাগরে আন্দামান এবং নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ মিলিয়ে দক্ষিণ ভারতে আগ্রহী পর্যটকদের জন্য প্রচুর ভ্রমণের জায়গা রয়েছে।

এগুলি না দেখে দক্ষিণ ভারত থেকে ফিরবেন না: 

কি কি দেখবেন:

hampi south india quick travel guide

  1. হাউস অফ ওয়ারশিপ: দক্ষিণ ভারতের দীর্ঘ ধর্মীয় ইতিহাস রয়েছে। এখানে পাবেন হিন্দু, ক্রিশ্চান, মুসলিম, জৈন, ইহুদি এবং বৌদ্ধধর্ম সহ নানান ধর্মীয় বিশ্বাসের বেশ কিছু প্রত্নতাত্ত্বিক এবং স্থাপত্যমূলক আশ্চর্য নিদর্শন। হাম্পি, তঞ্জাভুর এবং মামল্লপুরমে রয়েছে প্রচুর হিন্দু মন্দির। এই অঞ্চলের সবচেয়ে ব্যস্ততম ধর্মীয় স্থান হল তিরুপতি। কোচিতে ইহুদিদের সিনাগগ, হায়দ্রাবাদের মক্কা মসজিদ এবং কেরালার নমদ্রোলিং নিংমাপা তিব্বতী মনেস্ট্রিও যথেষ্ট উল্লেখযোগ্য।

  2. প্রাকৃতিক সৌন্দর্য: দক্ষিণ ভারত বিচিত্র ফ্লোরা এবং ফনায় সমৃদ্ধ বিস্তীর্ণ উপকূলীয় বনাঞ্চলের জন্য বিখ্যাত। দক্ষিণ ভারতের বনাঞ্চলগুলিতে এখনও ভারতের সবচেয়ে বেশি হাতি এবং বাঘের বসবাস। বন্যপ্রাণী দেখতে আগ্রহী হলে বন্দীপুর, মাদুরাই এবং পেরিয়ার জাতীয় উদ্যানে যান। আর কোভালম, ম্যাঙ্গালোর এবং গোকর্ণতে ভারতের সেরা কিছু বীচ রয়েছে।

কি কি করবেন:

kerala houseboat south india quick travel guide

  1. কেরালার ব্যাকওয়াটারে নৌকাবিহার করুন: প্রকৃতির মাঝে ঘুরে বেড়ানো আপনার পছন্দ হলে কেরালার অ্যালেপ্পেই-এর ব্যাকওয়াটারে হাউসবোটে প্রিয়জনের সঙ্গে একটি দিন কাটান। রাত্রিবেলা নৌকাটি জলের মাঝখানে স্থিরভাবে খোলা আকাশের নীচে দাঁড়িয়ে থাকে। এই অঞ্চলে সস্তায়ও হাউসবোট পাওয়া যায়।

  2. মুদুমালাই এবং বন্দীপুর জাতীয় উদ্যানে ওয়াইল্ডলাইফ সাফারিতে বেরোন: এই দুটি জাতীয় উদ্যানে না গিয়ে দক্ষিণ ভারতের ভ্রমণ সম্পূর্ণ হতে পারে না। ঊটি যাওয়ার পথে আপনি এই উদ্যানগুলি দেখতে দেখতে যেতে পারেন এবং ভাগ্য ভাল থাকলে হাতি, হরিণ, ময়ুর, বন্য শুয়োর এবং বেঁজী ইত্যাদি দেখতে পেতে পারেন তাদের এই প্রাকৃতিক আবাসে।

  3. পণ্ডিচেরিতে আধ্যাত্মিক উইকএণ্ড কাটান: যদি কখনও ফ্রান্সে না গিয়ে থাকেন, দুঃখ করবেন না। আপনি ফরাসি সংস্কৃতির এক ফালি পেয়ে যাবেন পণ্ডিচেরিতে, অধুনা পুদুচ্চেরি। পণ্ডিচেরি একদা ফরাসী উপনিবেশ ছিল এবং এখনও এই ফ্রেঞ্চ কোয়ার্টারটিতে ফরাসী স্থাপত্যকর্মের নিদর্শন রয়েছে। লে ক্যাফে-তে আপনার প্রিয়জনের সঙ্গে একটি রোম্যাণ্টিক ডেট নাইট আপনার অনেক দিন মনে থাকবে। এখানে থাকাকালীন প্রশান্ত আধ্যত্মিক অরোভিলে যেতে ভুলবেন না।

খাওয়া-দাওয়া:

food south india quick travel guide

  1. ইডলি এবং দোসা: দক্ষিণ ভারতের একটি মূল খাবার হল ইডলি। এটি আসলে চাল এবং মুসুর ডালের সেদ্ধ করা একটি স্পঞ্জের মত কেক, মশলাদার নারকেলের চাটনির সঙ্গে পরিবেশন করা হয়। দোসা হল চাল আর মুসুর ডাল দিয়ে বানানো একধরনের মুচমুচে প্যনকেক। মশালা দোসা হল এক ধরণের দোসা, এর মধ্যে আলুর ভর্তা ভরে নারকেলের চাটনির সঙ্গে পরিবেশন করা হয়। সারা দক্ষিণ ভারতে আপনি হরেক রকমের দোসা পাবেন। দক্ষিণ ভারতের প্রায় প্রতিটি রেস্টুরেণ্টেই ইডলি এবং দোসা পাওয়া যায়।

  2. উত্তপম এবং বড়া: উত্তপম হল ফেটানো চালের গুঁড়ো এবং মুসুর ডাল এবং কুচু কুচি করে কাটা তাজা সবজি দিয়ে বানানো একটি ভাজা প্যানকেক। অন্যদিকে, বড়া হল ভারতীয় ভাজা ডোনাট কিন্তু মশলাদার।

  3. ভাত এবং সেওয়াই: ভাত হল চালের সঙ্গে নানান জিনিসের মিশ্রণে বনানো উপাদেয় খাবার। বেশিরভাদ পদগুলিতেই রায়তা (দই) থাকে। সেওয়াই হল চালের তৈরি নুডলস যেটি গ্রেভির সঙ্গে খাওয়া হয়। মাছের ঝোল দিয়ে ভাত এবং সেওয়াই খেয়ে দেখুন। আপনার স্বাদকোরকগুলি চাঙ্গা হয়ে উঠবে।

  4. চেটিনাড় কুইজ্ন: এই পদটি ভারতের সবচেয়ে মশলাদার এবং সুবাসযুক্ত খাবার বলে পরিচিত। লবণ দেওযা সবজি, রোদে শোকানো মাংস, এবং অনেক রকমের মশলা দিয়ে বানানো এই পদটি আপনি আরও খেতে চাইবেন। ভেলাই পানিয়ারম, কন্ধরপ্পম, মশালা সীয়ম এবং করুপ্পত্তি পনিয়ারম ইত্যাদি হল এই কুইজিনের বিশেষ কয়েকটি পদ।

কখন যাবেন:

south india quick travel guide

ডিসেম্বর-ফেব্রুয়রী: এটি দক্ষিণ ভারত যাওয়ার সেরা সময়। আবহাওয়ায় আর্দ্রতার ভাগ কম থাকে এবং উষ্ণতা 22-30 ডিগ্রীর সেলসিয়াসের মধ্যে থাকে। কিছু পাহাড়ী অঞ্চল যেমন কেরালার মুন্নার অপেক্ষাকৃত বেশি ঠাণ্ডা থাকে, তাই সঙ্গে হালকা জ্যাকেট বা পুলওভার রাখা ভাল।

মে – অক্টোবর: এই অঞ্চলের পর্যটন শিল্পের উন্নতির একটি কারণ হল আয়ুর্বেদ। আর এটি সবচেয়ে বেশী প্রভাবশালী হয় বর্ষাকালে অর্থাত মে থেকে অক্টোবর। অক্টোবর/নভেম্বরে দক্ষিণ ভারতের অনেক রাজ্যেই দশহরা এবং দিওয়ালী উদ্‍যপিত হয়।

কিভবে পৌঁছবেন:

south india quick travell guide

বিমান-যোগে: ভারতের অন্যান্য প্রান্তের তুলনায় সবচেয়ে বেশি বিমানবন্দর রয়েছে এখানে, এবং ফলতঃ, দক্ষিণী রাজ্যগুলি ভারতবর্ষের বাকি অংশের সঙ্গে এবং বৃহদর্থে গোটা পৃথিবীর সঙ্গে সুসংযুক্ত। দক্ষিণ ভারতের মূল প্রবেশপথ হিসাবে বিবেচিত হয় চেন্নাই। অন্যান্য বড় বিমানবন্দরগুলি রয়েছে হায়দ্রাবাদ, ব্যাঙ্গালোর, কোয়েম্বাটোর, কোচি, কোজিকোড়, তিরুচিরাপল্লি এবং তিরুবনন্তপুরমে। এই বিমানবন্দরগুলি ছাড়াও প্রায় সারা দক্ষিণ ভারত জুড়েই অন্তঃরাজ্যীয় পরিষেবা চলে।

গাড়িতে: দক্ষিণ ভারত স্টেট এবং ন্যাশনাল হাইওয়েগুলির মাধ্যমে সুসংযুক্ত। নতুন কয়েকটি হাইওয়েতে টোল বসেছে, সুতরাং কিছু খুচরো টাকা সঙ্গে রাখুন।

বাসে: প্রচুর রাজ্যায়াত্ত বাস অপারেটর পরিবহণ পরিষেবা প্রদান করে থাকে দক্ষিণ ভারতে। কিছু কিছু অপারেটর দক্ষিণের রাজ্যগুলিকে গোয়া এবং মহরাষ্ট্রের সঙ্গেও যুক্ত করে। সরকারী বাস অপারেটরদের স্মার্টফোন অ্যাপ এবং ওয়েবসাইটও রয়েছে যেখানে আপনি বাসের রাস্তা এবং সম্যের ব্যাপারে ওয়াকিবহাল থাকতে পারেন। যদি আপনি আরামপ্রিয় হন এবং অল্প বেশি খরচ করতেও অসুবিধা না থাকে তাহলে প্রাইভেট বাস অপারেটর বেছে নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ হবে।

ট্রেনে: দক্ষিণ রেলওয়ে, দক্ষিণ-পশ্চিম রেলওয়ে এবং কোঙ্কন রেলওয়েজ দক্ষিণ ভারতকে ভারতের বাকি ভূখণ্ডের সঙ্গে যুক্ত করে। সম্পূর্ণ বাতানুকূলিত রাজধানী ট্রেনগুলি কয়েক ঘণ্টায় হাজার কিলোমিটার রাস্তা চলে। শতাব্দী ট্রেনগুলি শহরের মধ্যে চলে এবং রাজ্যের রাজধানীগুলিকে সংযুক্ত করে। অল্প দূরত্বের জন্য রয়েছে লোকাল ট্রেনও।

আশেপাশের জায়গা ঘুরে দেখতে হলে:

south india quick travel guide

স্থানীয় পরিবহন: দক্ষিণ ভারতের বড় বড় শহরগুলির মধ্যে সাইকেল-রিক্শা, অটো-রিক্শা, বোট, ট্যাক্সি, বাস এবং ট্রেন পরিবহন রয়েছে। খরচ শহর অনুসারে আলাদা আলাদা হতে পারে। বুক করার আগে দরাদরি করে নিন। কোন কোন ড্রাইভার মিটারে যেতে না চাইতে পারেন। আগেই মালপত্রের ভাড়া এবং নাইটচার্জের কথা বলে নিন।

এখানকার সাইকেল-রিকশাগুলি তিন-চাকার এবং প্যাডেলে চলে, আবার অটো-রিক্শাগুলি তিন-চাকার মোটরচালিত যান, মাথার ওপর থাকে টিনের ছাদ। সবথেকে বেশি তিনজন লোক বসতে পারেন। ভারতে অটোযাত্রা বেশ মজার। বিক্রম এবং টেম্পো হল বেশি জায়গাওযালা বড় আকারের অটো-রিক্শা। এগুলি সাধারণত বাঁধা-ধরা রাস্তাতেই চলে।

ট্যাক্সি: ট্যাক্সি সাধারনত মিটারে চলে। কিন্তু বেশিরভাগ ট্যাক্সি-ড্রাইভারই মিটারে যেতে চান না এবং টুরিস্টদের থেকে বেশিই টাকা নেন। তার চেয়ে প্রিপেড ট্যাক্সি নেওয়া ভাল। অপেক্ষাকৃত বড় শহরগুলিতে আপনি রেডিও ট্যাক্সি ভাড়া করতে পারবেন। বাসে যাতায়াত করলে খরচ সবচেয়ে কম হয়। আরামদায়ক জার্নি করতে হলে অবশ্যই কোন প্রাইভেট অপারেটর বেছে নিন।

বোট: অনেক স্থানীয় লোকজনই দক্ষিণ ভারতের অনেক নদীতে বোট এবং খেয়া-নৌকায় করে যাতায়াতের সুবিধা দিয়ে থাকেন। কাঠের ডোঙা থেকে শুরু করে দৈত্যাকার নৌকা – যাই চান না কেন পেয়ে যাবেন নদী পারাপার করতে বা ব্যাকওয়াটারে ভ্রমণের জন্য। বেশিরভাগ বড় বোটগুলিতেই সাইকেল, মোটরসাইকেল এমনকি গাড়িও নিয়ে যেতে পারবেন নামমাত্র মূল্যে।

সঙ্গে কি কি নেবেন:

  1. ট্রেকিং শু, সানগ্লাস, টুপি বা হ্যাট এবং সানস্ক্রীন লোশন অবশ্যই রাখুন

  2. গ্রীষ্মকালে গেলে সুতির জামাকাপড়, কোন বীচে গেলে বীচে পরার মত জামাকাপড়, বর্ষাকালের জন্য ছাতা এবং/অথবা রেনকোট

  3. দক্ষিণ ভারতের কিছু মন্দিরে ট্র্যাডিশনাল পোশাক ছাড়া ঢুকতে দেওয়া হয় না, সুতরাং এক সেট এথনিক জমাকাপড় সঙ্গে রাখা ভাল

বিস্তৃত সবুজ সমুদ্র-উপকূল, শান্ত ব্যাকওয়াটার এবং অসংখ্য স্থাপত্যকলা এবং বিস্ময়কর ঐতিহাসিক নিদর্শন দক্ষিণ ভারতকে প্রাচীনত্ব এবং আধুনিকতার এক মিশ্রণ করে তুলেছে। এক অবিস্মরণীয় অভিজ্ঞতার জন্য ঘুরে আসুন।

More Travel Inspiration For Allepey