ভারতবর্ষেই 4টি প্রকৃত বিদেশ ভ্রমনের অভিজ্ঞতা

Pallavi Siddhanta

Last updated: Sep 24, 2019

Want To Go ? 
   

16শ শতাব্দী থেকে স্বাধীন হওয়া পর্যন্ত, ভারতবর্ষ বিদেশী সাম্রাজ্যের উপনিবেশিকের আস্থানা ছিল। এমনকি আজকের দিনেও আমাদের দেশে পূর্বে বসবাসকারী মানুষের মূল্যবোধ, আচার আচরণ এবং সংস্কার এই জায়গাগুলিকে সবার থেকে আলাদা করে রেখেছে। যদি আপনি সত্যিকারের পর্তুগীজ ও ফরাসি অভিজ্ঞতা করতে যান কিন্তু হাতে সময় নেই বলে অত দূরে যেতে পারছেন না, তাহলে চলে আসুন ভারতবর্ষে কোন এক সময়ে গড়া তাদের উপনিবেশে। বিশ্বাস করুন, আপনি হতাশ হবেন না!

1. চলুন পণ্ডিচেরি

ফরাসি অভিজ্ঞতার জন্য

Pondicherry, Foreign Experiences in India

 

1954 সাল পর্যন্ত পণ্ডিচেরি একটি ফরাসি উপনিবেশ ছিল এবং আজকের দিনেও সে তার ফরাসি উপনিবেশের মাধুর্য ধরে রেখেছে। ফরাসি স্থাপত্য, ফরাসি খাবার, ফরাসি নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের কেনাকাটা – আপনার মনে ধরা দেওয়া জিনিসটি বেছে নিন। সমুদ্রের তীরবর্তী অবস্থিত, শ্বেতবর্ণে আলেখ্য উজ্জ্বল হলুদ রঙের বাইরের দেওয়াল এবং কাগজফুলের লতায় জড়ানো সাদা বাংলোবাড়ি নিস্তব্ধে ফরাসি আবাসের বৈশিষ্ট্য তুলে ধরে। অরোভিল, পণ্ডিচেরির অন্যতম প্রধান আকর্ষণ যা সিটি অফ ডন নামেও প্রচলিত। ফরাসি আর্কিটেক্ট দ্বারা ডিজাইন করা এই জায়গা যেন পণ্ডিচেরির মধ্যে বাসা বাঁধা ছোট্ট একটা শহর। গোথিক স্টাইলে নির্মিত সেক্রেড হার্ট অফ জিসাস চার্চ যার জানালার কাচ এবং দেওয়ালের চিত্রশিল্প যিশু খ্রিস্টের জন্মের কাহিনী ব্যাপ্ত করে। পণ্ডিচেরিতে বেকারিকে এখনও বুলঞ্জরে বলা হয় এবং এখানকার নরম ক্রিপ্স আপনার মনের কোনে নিশ্চয়ই জায়গা করে নেবে।

পণ্ডিচেরির রঙে নিজেকে রাঙাতে হলে সপ্তাহখানেক এখানে থেকে শহরের কোনা কোনা ঘুরে দেখুন। ফরাসি অনুপ্রাণিত পণ্ডিচেরির রাস্তায় পদবিহার এবং নুড়িপাথরের সড়কের উপর সাইকেল আরোহণ, সুদূর ফ্রান্সের কখনও না ভুলতে পারা একরাশ স্মৃতি উপহারস্বরূপ সারা জীবন আপনার সাথে থাকবে।

Book Your Flight to Chennai Now!

2. চলুন গোয়া

পর্তুগীজ জীবনের ছোঁয়া নিতে

se-cathedral-goa

আহ, গোয়া। 1510-1961 সালের একটি পর্তুগীজ উপনিবেশ, চিত্রবৎ গোয়া 450 বছর ধরে পর্তুগীজ দ্বারা শাসিত ছিল। গোয়াতে পর্তুগীজদের ইতিহাস ও প্রভাব প্রায় ভারতবর্ষে ব্রিটিশদের ইতিহাস ও তার প্রভাবের মতই।  মনোরম সড়ক, পুরনো পর্তুগীজ ভিলা এবং বিজড়িত চার্চ মনে করিয়ে দেয় গোয়াতে ফেলে যাওয়া পর্তুগীজদের জীবন ধারণা। সেইণ্ট ক্যাজেতান চার্চ এবং পরিত্যক্ত প্রায় ধ্বংস হয়ে যাওয়া সেইণ্ট অগস্টিন চার্চ পর্তুগীজদের তৈরি করা চিত্তাকর্ষক বৃহৎ চার্চের ঐশ্বর্যময় স্মৃতি বহন করে। পর্তুগীজদের স্পন্দন অনুভব করার জন্য পর্তুগীজদের তৈরি করা প্রথম চার্চ সেইণ্ট ক্যাথারিনস চ্যাপেল অবশ্যই ঘুরে দেখবেন। পর্তুগীজ স্থাপত্যশিল্পের চারুকলায় আত্মভূত, বিশেষত চার্চের দরজা এবং জানালা তার সাথে দূরে দেখতে পাওয়া স্থানীয় ঘরবাড়ি, সবে মিলে এক মনরঞ্জিত দৃশ্য যার থেকে আপনি চোখ সরাতে চাইবেন না। রাস্তার দুপাশ লাল, হলুদ, গোলাপি, সবুজ রঙে রাঙানো উজ্জ্বল পরিবেশ আপনাকে মনে করাবে যেন আপনি পর্তুগীজ রিপাব্লিকে রয়েছেন। ফাউনটেইনহাস গ্রামে গিয়ে আপনি কিছু মনোরম পুরনো পর্তুগীজ বাড়িও দেখতে পারেন।

প্রো টিপ: কাসা আরাউজো আলভেরেস নামেও প্রচলিত 250 বছরের পুরনো পর্তুগীজ স্টাইলের ভিলা দেখার জন্য পোণ্ডা শহরের কাছে লৌটোলিমে যান আর জেনে নিন সেই সময়ে পর্তুগীজ পরিবারেরা কিভাবে জীবনযাপন করতো।  পরিদর্শকদের জন্য খোলা এই ভিলাতে আপনি দেখতে পাবেন সেই সময়কার আসবাবপত্র, বাসনপত্র, ঘরের সাজসজ্জা এবং আরও অনেক কিছু।

Book Your Flight to Goa Now!

3. চলুন ট্র্যাঙ্কবার

প্রাচীনকালের ডেনিশ উপনিবেশের অভিজ্ঞতার জন্য

Tranquebar, Danish Experience

 

1620 সালে, ডাচ ইস্ট ইণ্ডিয়া কম্পানির কাছ থেকে ট্র্যাঙ্কবার ছিনিয়ে ডেনিশ দ্বারা উপনিবেশিত হয়। ডেনিশ স্থাপত্যশিল্পে নির্মিত দুশ বছরের পুরনো টাউন গেট দিয়ে শহরে প্রবেশ করার সময় থেকেই এই শহরের প্রাচীন ইতিহাস অনুভব করতে পারবেন। শহরের প্রধান সড়ক, দ্য কিং’স স্ট্রিট, দ্য কুইন’স স্ট্রিট এবং দ্য অ্যাডমিরাল স্ট্রিট প্রাচীন সময়ের ট্র্যাঙ্কবারের কাহিনী ব্যপ্ত করে। সেই সাথে ডেনিশ কেল্লা, ডেনিশ শিল্পকর্মের মিউজিয়াম এবং পুরনো উপনিবেশিক বাড়ি। এখানে ডেনিশ পেস্ট্রি পাওয়া হয়তো মুশকিল হতে পারে কিন্তু ট্র্যাঙ্কবারের সুস্বাদু সামুদ্রিক খাবার প্লেটভরে পাবেন। ট্র্যাঙ্কবার শহরকে ‘থারানগাম্বাদি’ নামেও জানা যায়, তামিল ভাষায় যার মানে হল, গান করা সমুদ্র তরঙ্গের দেশ। নদীর পাড়ে বসে, হাওয়ায় নিজের চুল ভিজিয়ে, ইতিহাস মাখানো ভুলে যাওয়া সুন্দর এই শহরকে অনুভব করুন।

Book Your Flight to Chennai Now!

4. চলুন দমন

মনমুগ্ধকর পর্তুগীজ স্বপ্নকে অনুভব করার জন্য

The Old Portuguese Colony, Daman

1961 সালে পর্তুগীজদের হাত থেকে উদ্ধার হওয়ার পর দমন ভারতীয় অঞ্চলের অন্তর্গত হলেও পর্তুগীজরা দমনের মাটিতে তাঁদের সাংস্কৃতিক ছাপ রেখে গেছে। দমন দুটি ভাগে ভাগ করা, মোটি দমন আর নানি দমন। নানি দমন হল দমনের একটি ছোট অংশ, রেস্টুরেণ্ট ও হোটেলে ভরা কেন্দ্রশাসিত এই অঞ্চলে সারাবছর পর্যটকদের ভির লেগেই থাকে। মোটি দমন বা বড় দমন, একটি ছোট শহর যা মোটি দমনের মধ্যেই অবস্থিত। পর্তুগীজদের স্থাপত্যকলায় নির্মিত দুটি চার্চ- দ্য চার্চ অফ সেইণ্ট পল আর দ্য ক্যাথিড্রাল অফ বন জেসাস, সৌন্দর্যে পরিপূর্ণ চারুশিল্পে লিপ্ত ক্ষোদিত তোরণ আর ভিতরের কারুকার্যময় রঙবেরঙের কাচ আপনাকে পৌঁছে দেবে এক রহস্যময় শান্তিপূর্ণ পরিবেশে। দমনের লাইটহাউস আপনার আকর্ষণের অভিধানে এক নতুন শব্দ জুড়ে দেবে যদি আপনি সমুদ্রসৈকতে-গোধূলিবেলার-আলোকছটায়-গা-ভাসিয়ে দেওয়ার মত মানুষ হন। এখানকার কিছু রেস্টুরেণ্ট পর্তুগীজ খাবারও পেয়ে যাবেন যার স্বাদের অনুভূতি হয়তো আপনার নেওয়াই উচিৎ।

Book Your Flight to Mumbai Now!

More Travel Inspiration For Pondicherry